লিয়ন মীর: নিজ দেশে নিরাপদভাবে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে রোহিঙ্গারা যে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গাদের এই পদক্ষেপ নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে তাগিদ যোগাবে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের নানান শর্ত ও অনিহা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কয়েক দফা রোহিঙ্গাদের অনিহার জন্য প্রত্যাবাসন শুরু হতে গিয়েও হয়নি। সেখানে রোহিঙ্গারা কিছু দাবি তুলে ধরেছেন। দাবি পূরণ না হলে তারা ফিরে যাবে না।
তারা বলেন, যদিও তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক তবে প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য বাধা। কেননা, বিশ্ব সম্প্রদায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের দাবি এবং চাহিদা গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এছাড়া অনিরাপদ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কোনো পক্ষের কাছেই গ্রহণেযোগ্য নয়। এসব কারণেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আটকে আছে।
বিশ্লেষকদের মতে, মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা বলে কিন্তু প্রত্যাবাসনের জন্য করণীয় পদক্ষেপ দেশটি গ্রহণ করে না। মিয়ানমার নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি না করেই অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গাদের নিতে চায়। আর রোহিঙ্গারা অনিরাপদ অবস্থায় যেতে চায় না। এটা মিয়ানমার যেনেই এই প্রস্তাব দেয়। কেননা, এটা মিয়ানমারের একটা কৌশল। যাতে করে প্রত্যাবাসন আটকে থাকে।
তারা আরো বলেন, নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের এই বিক্ষোভ-সমাবেশ কিছুটা হলেও প্রত্যাবাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে বিশ্ব সম্প্রদায়ের একটি নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আলাদা তাগিদ সৃষ্টি হবে।
উল্লেখ্য, রোববার সকালে নাগরিকত্ব প্রদানের মাধ্যমে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিসহ নানা দাবি নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে বিক্ষোভ করছেন রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, লম্বাশিয়া, টেকনাফের শালবাগান, নয়াপাডা, লেদাসহ ৩৪টি ক্যাম্পে একযোগে বিক্ষাভ শুরু হয়।
মিছিল ও সমাবেশের মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অনুরোধ জানাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। ‘ব্যাক টু হোম’ স্লোগানে এই বিক্ষোভে লাখো রোহিঙ্গা অংশগ্রহণ করেছেন। এ সময় বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ১৯ দফা দাবি তুলে ধরেছেন রোহিঙ্গা নেতারা। এসব দাবি বাস্তবায়ন করা হলে মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে নিরাপদভাবে বসবাস করতে পারবেন বলে মনে করছেন রোহিঙ্গারা।