সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়া: প্রকৃতি ছুড়ছে মিসাইল, মরছে মানুষ। বজ্রপাত প্রকৃতির ভয়ংকর, ভয়াল এক ক্ষেপণাস্ত্র। বজ্রপাত মূর্তিমান আতঙ্কের নামও বটে, যা প্রতিবছর কেড়ে নিচ্ছে শত শত মানুষের জীবন। প্রকৃতির নিষ্ঠুর থাবা থেকে মানুষকে বাঁচানোর আধুনিক কৌশল অজানা নয়। শুধু প্রয়োজন সঠিক উদ্যোগ-আয়োজন।
সাবধানের মার নেই, এটি মাথায় রেখে সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে প্রথম পদক্ষেপ।
বর্ষাকাল শুরু হয়েছে। আর বর্ষাকালের সঙ্গেই রয়েছে বজ্রপাতের যোগসাজশ। বজ্রপাতে প্রাণহানি ও আহতের সংখ্যা কমাতে মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে দেশে অনেক স্থানে লাইটনিং এরেস্টার বা বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন করা হচ্ছে।কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলাতে বিভিন্ন স্থানে বজ্র নিরোধক দণ্ড দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ সৈয়দা রাশিদা বেগম (৩৩৫) এর উদ্যোগে মিরপুর উপজেলার ১৭ টি জায়গায় এই বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সৈয়দা রাশিদা বেগম এমপির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বজ্রপাতে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। আমি বজ্রপাতের মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর জন্য আমার সংসদীয় এলাকাতে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করছি। যেটি পর্যায়ক্রমে সকল স্থানেই স্থাপন করা হবে। বিশেষ করে আমি উঁচু বিল্ডিং এর ছাদে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার আশ্রায়ন প্রকল্প ও জনসমাগম কৃত স্থানে এটি নির্মাণ করেছি। এবং আমার সংসদীয় এলাকায় সকল স্থানে নির্মাণ করব। বর্তমান সরকারের দুর্যোগ প্রতিরোধের এই উদ্যোগকে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব।
উল্লেখ্য সরকার ২০১৫ সালে বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসাবে ঘোষণা দেয়। তখন বজ্রপাতরোধে সারা দেশে ‘তালগাছ’ রোপণ কর্মসূচিও হাতে নিয়েছিল সরকার। তালগাছ খুবই ধীরগতিতে বৃদ্ধি পায়। তালগাছ পুরোপুরি পরিণত হতে ২০-৩০ বছর পর্যন্ত লেগে যায়। এসব গাছ থেকে সুফল পেতে আরও অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। ততদিন মানুষের প্রাণহানি থেমে থাকবে না।
তাছাড়া বজ্রপাতরোধে এটি একটি সনাতন পদ্ধতি। আধুনিক প্রযুক্তির এ যুগে সনাতন পদ্ধতির ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল না থেকে আধুনিক ‘বজ্রনিরোধক পোল’ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতেও একসময় বজ্রপাতে বহু মানুষের মৃত্যু হতো। কিন্তু তারা বজ্রনিরোধক খুঁটি বা পোল স্থাপন ও মানুষকে সচেতন করার মধ্য দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে এনেছে।