সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়া ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ২৩৩৬ তম হয়ে শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার চরসাদীপুর ইউনিয়নের কৃষক পরিবারের সন্তান আরিফুল ইসলাম। এক ঘণ্টা সময়ের ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় আরিফুল পেয়েছেন ৭২ দশমিক ২৫। তার মেরিট স্কোর ২৭২ দশমিক ২৫। তার ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল পাবনা মেডিকেল কলেজ।
আরিফুল ইসলাম সাধারণ এক কৃষক পরিবারের সন্তান। কৃষক বাবাসহ পরিবারের সবার মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি। ছোটবেলা থেকে মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। নিজের চেষ্টা, পরিবারের সদস্যদের এবং পদ্মা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন গ্রপের বড় ভাইগণ সহ শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় অদম্য মেধাবী এ শিক্ষার্থী নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। কোনো বাধাই দমিয়ে রাখতে পারেনি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বেড়ে উঠা আরিফুলের শিক্ষাজীবনের পথ চলাকে। অদম্য সেই আরিফুল এবার শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
আরিফুল কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার চরসাদীপুর ইউনিয়নের ঘোষপুর গ্রামের এক অতি সাধারণ পরিবারের সন্তান। বাবা মো. আলাউদ্দিন পেশায় একজন সাধারণ কৃষক ও মা মোছা. নেহারা খাতুন গৃহিনী। ৪ ভাইবোনের মধ্যে আরিফুল মেঝো। ছোটবেলা থেকেই তিনি অদম্য মেধাবী ছিলেন।
কোমরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালে জিপিএ-৫.০০ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। পরে শহীদ বুলবুল কলেজে ভর্তি হয়ে ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫.০০পান তিনি। এ ছাড়া আরিফুল শিক্ষাজীবনে বৃত্তিসহ বিভিন্ন মেধা নির্বাচনি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করেন।
এদিকে আরিফুলের নিজ গ্রামে বইছে আনন্দের বন্যা। শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়ায় পুরো গ্রাম ও ইউনিয়নের মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনন্দন জানাচ্ছেন তাকে। আরিফুল বলেন, মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় প্রথমেই মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। আর সেই লক্ষ্যে আমি লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছি। সরকারি মেডিকেলে চান্স পেয়ে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যাতে একজন আদর্শবান ডাক্তার হয়ে নিজ গ্রামসহ আমাদের উপজেলার দরিদ্র-অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, আমি সাধারণ কৃষক পরিবারের একজন সন্তান হওয়ায় নিজে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঠে বাবার কৃষি কাজেও সহযোগিতা করতাম। আমার এই ভালো ফলাফলের পেছনে মা-বাবা, বড় ভাইদের ও শিক্ষকদের অবদান অপরিসীম।
কোমরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুছ আলী মিঞা বলেন, আরিফুল খুবই মেধাবী ছাত্র। এসএসসি পরীক্ষায় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে জিপিএ-৫.০০ পেয়েছিল। তার কৃতিত্বে আমরা গর্বিত।