নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার সংক্রমণ রোধে চলমান ১১ দফা বিধিনিষেধ সংশোধন করে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবে এবং বাংলাদেশে সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বিধিনিষেধ জারি করা হলেও সেগুলো মেনে চলার প্রবণতা দেখা যায় না সাধারণ মানুষের মধ্যে। এই বিধিনিষেধ না মানার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কথাও বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সর্বক্ষেত্রে বিধিনিষেধ মানার বা মানানোর বিষয়ে অবহেলা দেখা যায়। দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে বলা হলেও অনেকেই তা করছেন না। ‘নো-মাস্ক, নো সার্ভিস’ লেখা থাকলেও মাস্ক ছাড়াই সার্ভিস নিতে দেখা যায়। তবে সরকারি অফিস-আদালত এবং হাসপাতালগুলোতেই কেবলমাত্র বিধিনিষেধগুলো মানতে দেখা যায়।
বিধিনিষেধের মানানোর প্রসঙ্গে স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেছেন, বিধিনিষেধ যেগুলো সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে সেগুলোর জন্য সরকারের যেমন দায়িত্ব আছে পাশাপাশি জনগণকেও নিজ দায়িত্বে বিধিনিষেধগুলো মানা উচিৎ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও এ বিষয়ে আরেকটু জোর দেওয়া উচিৎ। বিধিনিষেধ মানানোর ক্ষেত্রে যে সকল মন্ত্রণালয় জড়িত তাদের উদ্যোগ নেয়া উচিৎ। জনসাধারণ এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নেয়া উচিৎ যেন সকলে স্বাস্থ্যবিধি মানে।
ঢাকায় সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হওয়ায় এটিকে রেড জোনে অন্তর্ভুক্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু রেড জোন হলেও মানুষ গাদাগাদি করে বাজার ঘাটে যাচ্ছে। অফিস-আদালতে মানুষের ভিড়, মানা হয়না সামাজিক দূরত্ব। ফলে সংক্রমণের হার অনেক বেড়েছে। যদিও করোনার এই ভ্যারিয়েন্ট খুব একটা উদ্বেগের নয়, তবু অবহেলা না করে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনায় ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ইতোমধ্যে অনেকটাই প্রকাশ্য। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩২২ জন। তাদের মধ্যে করোনার টিকা নিয়েছেন মাত্র ৮৮ জন। বাকি ২৩৪ জনই টিকা নেয়নি। শতকরা হিসাবে টিকা নেয়নি এমন ৭২.৭ শতাংশ মারা গেছে। আর টিকা নিয়ে মারা গেছে ২৭.৩ শতাংশ।
জানা যায়, টিকা নেয়ার পরও যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই বয়স্ক এবং বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সকলকে টিকা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এই বিষয়ে আরও নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন তারা।