নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার দুই ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক (শরীরচর্চা) হারুনুর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার ৩১ মে মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্টের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্ত চিঠিতে কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষক হারুনুর রশিদ মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে যৌন হয়রানিমূলক আচরন করেছেন, আবার ছাত্রীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থান নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলা, ক্লাশে অমনোযোগিতা, শ্রেণিকক্ষে বসে মোবাইলে ভিডিও দেখা, মাদ্রাসা প্রধানের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়া এবং অবাধ্যতার পর্যায়ে পরে এমন আচরন করাসহ নানা অপরাধ উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠির অনুলিপি নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মাহপরিচালক, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাণীনগর আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট শরিফ উদ্দীন মাযহারী বলেন, সাময়িক বরখাস্তের চিঠি শিক্ষক হারুনুর রশিদকে ওই দিনই দেওয়া হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্তের ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে শিক্ষক হারুনুর রশিদ বিষয়টি নিয়ে এড়িয়ে যান। বার বার মাদ্রাসা সুপারের সাথে কথা বলতে বলেন তিনি।
রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপাভাইজার কামরুল হাসান বলেন, মাদ্রাসা থেকে শিক্ষক হারুনুর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করার একটি চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অফিসিয়ালি জানানো হবে।
উল্লেখ্য, শিক্ষক হারুন মাদ্রাসায় বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রীর শরীর নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলাসহ বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছিল। গত রবিবারও মাদ্রাসা চলাকালে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর শরীর নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলাসহ বিভিন্নভাবে তাকে যৌন হয়রানি করেন শিক্ষক হারুন। ঘটনাটি জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। এ ঘটনায় শিক্ষক হারুনের বিরুদ্ধে সোমবার মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্রী ও অভিভাবক মাদ্রাসা সুপারের কাছে অভিযোগ দেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। এমন ঘটনায় দেশের জাতীয় ও স্থানীয় গনমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়।
তার বিরুদ্ধে ওঠা ওই মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত দুই ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত বুধবার ২৪ মে সরেজমিনে মাদ্রাসা পরিদর্শণ সাপেক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হুসেইন দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকেও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।