রুকন উদ্দিন, কেন্দুয়া প্রতিনিধি: দিন গিয়ে মাস আসে, মাস গিয়ে বছর, বছর গিয়ে যুগ তর সাথে কালের পরিক্রমায় সব কিছুতেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। ঠিক তেমনি আধুনিকতার স্পর্শে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি এখন শুধুমাত্রই স্মৃতি। গ্রামগঞ্জের জরাজীর্ণ মাটির আঁকাবাঁকা মেঠো পথে ধীরে ধীরে গুন গুন করে বয়ে চলা গরুর গাড়ি এখন আর চোখে পড়ে না বললেই চলে। যা এক সময় গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী গাড়ি হিসেবে প্রচলিত ও যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল। কয়েক বছর আগে পণ্য পরিবহন ছাড়াও বিয়ের বর-কনে থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন বহনে গরুর গাড়িই একমাত্র অবলম্বন ছিল।
যে গ্রামে পরিবারে মধ্যে গরুর গাড়ি ছিল তাদেরকে অনেকেই কদর করত। গ্রামের কৃষকগন প্রতিদিন ফজরের আজানের আগেই গরুর গাড়িতে কখনো গোবর সার, কখনো গরুর খাবার ও লাঙল-মই-জোয়াল নিয়ে মাঠে যেত হাল চাষ করার জন্য।
প্রাচীনকাল থেকেই গ্রামের মানুষের পরিবহনের ক্ষেত্রে গরুর গাড়ির ব্যাপক প্রচলন ছিল। বাঙালির ঐতিহ্য গরুর গাড়ি যান্ত্রিক যুগে এখন অতীত।
বিভিন্ন উৎসব গরুর গাড়ি ব্যবহার ছিল অপরিহার্য। আগে অনেকেই এই গাড়ি চালিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ এবং উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ছিল। গ্রামের বউ ঝিদের নাইওর যেতে গরুর গাড়ি ব্যবহৃত হতো চোখে পরার মত ।
গাড়ি চালানোর সময় তারা আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে মনের সুখে গাইতো ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই কত রব আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে..’ এখন চাইয়া থাকলেও গরুর গাড়ি আর চোখে পড়ে না। আর গাড়িয়ালরাও গান গায় না।
আধুনিকতার কারণে হারিয়ে গেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে গাড়িয়াল পেশাও। গরুর গাড়ির ঐতিহ্য শহরের ছেলে-মেয়েরা তো দূরের কথা গ্রামের ছেলে-মেয়েরাও গরুর গাড়ি চিনতে পারবেনা।